Use APKPure App
Get সূরা আল-ফাতাহ old version APK for Android
নামকরণ,শানে নুযূল,উচ্চারণ, অর্থ, তাফসীর এবং Offline mp3 বিস্তারিত একসঙ্গে পাবেন|
সূরা ফাত্-হ অথবা বিজয় - ৪৮
২৯ আয়াত, ৪ রুকু, মাদানী
[দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা : ১) ৪৭ নং সূরার ভূমিকাতে মদিনাতে অবতীর্ণ সূরাগুলির যে শ্রেণী বিভাগ করা হয়েছে সেই শ্রেণীর এটি দ্বিতীয় সূরা। এই সূরাটির সময়কাল হুদায়বিয়ার সন্ধির সময়কাল আর তা হচ্ছে ৬ই হিজরী জুল-কাদ মাস বা ৬২৮ খৃষ্টাব্দ ও ফেব্রুয়ারী মাস। [ দেখুন ৯ : ১৩ আয়াতের টিকা নং ১২৬১ ]।
২) রাসুলের (সা ) জীবদ্দশায় হুদায়বিয়ার সমতলভূমির অবস্থান ছিলো মক্কা থেকে মদীনা গামী রাস্তার সামান্য পশ্চিমে। মক্কা থেকে দূরত্ব ছিলো উত্তরে একদিনের রাস্তা। রাসুলের ( সা ) হিজরতের পরে ছয় বৎসর অতিবাহিত হয়ে পড়েছে। তার প্রিয় জন্মভূমি মোশরেক কোরাইশদের স্বেচ্ছাচারী কর্তৃত্বের অধীনে। কিন্তু এই ছয় বৎসরে মদীনায় ইসলাম বিস্তৃতি লাভ করে। ইতিমধ্যে মুসলমানদের কিব্লা নির্ধারিত হয়েছে পবিত্র কাবা অভিমুখে। সুতারাং মক্কা নগরী তথা কাবা মুসলমানদের অতি প্রাণপ্রিয় পবিত্র স্থানরূপে পরিগণিত হতো। সেই প্রাচীনকাল থেকে এই প্রথা চলে আসছিলো যে, আরবের প্রতিটি অধিবাসী নিরস্ত্র অবস্থায় পবিত্র কাবাঘর প্রদক্ষিণ করার অধিকার রাখে। এই পবিত্র স্থানে পবিত্র মাসে [ দেখুন ২ : ১৯৪ সূরার টিকা ২০৯ ] সকল প্রকার যুদ্ধ বিগ্রহ নিষিদ্ধ। এই পবিত্র মাসগুলোর মধ্যে জুল-কাদ মাস অর্ন্তভূক্ত। সে কারণেই ৬ষ্ঠ হিজরীর জুল-কাদ মাসে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) সংক্ষিপ্ত হজ্জ বা উমরা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। [ দেখুন ২ : ১৯৬ ] আয়াতের টিকা ২১২ ]। সে ভাবেই রাসুল (সা ) নিরস্ত্র অবস্থায় তাঁর অনুসারীদের সমভিব্যবহারে মদিনা থেকে মক্কার পথে যাত্রা করেন। চৌদ্দশ থেকে পনেরশ মুসলমানের বিশাল দল তাঁর সঙ্গী হন।
৩) মুসলামনদের এই তীর্থযাত্রা, মক্কার স্বেচ্ছাচারী মোশরেক কোরাইশদের মনঃপুত হলো না। তাদের পাপিষ্ঠ মন শঙ্কায় পরিপূর্ণ হলো। তারা নিরস্ত্র মুসলমান তীর্থযাত্রীদের বাধাদানে দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করলো। ফলে আল্লাহ্র রাসুল মক্কাতে প্রবেশ না করে মক্কা থেকে সামান্য পশ্চিমে যেয়ে হুদায়বিয়া নামক স্থানে অবস্থান গ্রহণ করেন, যেখান থেকে তিনি কোরাইশদের সাথে সন্ধির আলোচনা করেন। রাসুল (সা ) যে কোনও মূল্যে পবিত্র স্থানে কোরাইশদের সংহিসতা প্রতিরোধ করতে বদ্ধ পরিকর ছিলেন। অপরপক্ষে বিগত ছয় বৎসরের অভিজ্ঞতা কোরাইশদের এই শিক্ষা দেয় যে, ইসলামকে ধ্বংস করা সম্ভব নয়, বরং চর্তুদিক থেকে তাদের শক্তি সীমিত হয়ে আসছে এবং ইসলামের ব্যপক প্রসার লাভ ঘটছে। ইসলামের আধ্যাত্মিক ক্ষমতার প্রকাশ তারা বিভিন্ন সময়ে সাংগঠনিক ও প্রতিরোধ ক্ষমতার মাধ্যমে উপলব্ধি করেছে। ফলে তারা রাসুলের (সা ) সাথে হুদায়বিয়ার নামক স্থানে সন্ধি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে ইসলামকে এবং মুসলমানদের অস্তিত্বকে স্বীকার করে নেয়। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ নেতার অধীনে সমগ্র মুসলিমরা হুদায়বিয়া নামক স্থানে বৃক্ষের নীচে [ ৪৮ : ১৮ ] চুক্তির স্বপক্ষে যে ভাবে একত্বতা প্রদর্শন করে থাকেন তা ভবিষ্যতের বিশাল শক্তিশালী জাতীয়বাদেরই ইঙ্গিত বহন করে।
৪) এ ভাবেই সন্ধির চুক্তিপত্র সাক্ষরিত হয় যা হুদায়বিয়ার সন্ধি নামে বিখ্যাত। চুক্তির শর্তসমূহ ছিলো নিম্নরূপ :
১) দুদলের মাঝে দশ বছরের জন্য শান্তির চুক্তি বলবৎ থাকবে।
২) যে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠি নিজ স্বাধীনতা অনুযায়ী যে দলে ইচ্ছা মিলিত হওয়ার ক্ষমতা রাখে।
৩) মক্কার কোরাইশদের অধীনের কোনও কোরাইশ যদি কোরাইশদের অনুমতি ব্যতীত মদিনায় গমন করে ও মদিনায় রাসুলের (সা ) আনুগত্য স্বীকার করে, তবে তাঁকে মক্কাতে ফেরত দিতে মুসলমানেরা বাধ্য থাকবে। অপরপক্ষে, বিপরীত ক্ষেত্রে মুসলিমদের জন্য এই আইন প্রযোজ্য থাকবে না।
৪) রাসুল (সা ) এবং তাঁর অনুসারীরা সে বছর মক্কাতে প্রবেশের অনুমতি লাভ করবেন না। পরবর্তী বছর থেকে নিরস্ত্র অবস্থায় তাঁরা মক্কা নগরীতে প্রবেশের অধিকার লাভ করবেন।
৫। উপরিউক্ত চুক্তির তিন নম্বর ধারাটি সমতার ভিত্তিতে সম্পাদিত না হওয়াতে মুসলিম শিবিরে অসন্তোষের জন্ম দেয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটা কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিলো না। কোনও মুসলিমকে মক্কাতে ফেরত পাঠানোর অর্থ এই নয় যে, তাঁকে স্বধর্ম ত্যাগ করতে হবে বা তিনি ইসলামের তথা আল্লাহ্র অনুগ্রহ বঞ্চিত হবেন। প্রকৃতপক্ষে এমন প্রতিকূল অবস্থার বিরুদ্ধেও ইসলামকে যিনি নিজ জীবনে ধারণ করবেন, তিনি অবশ্যই তাঁর উদাহরণ দ্বারা অপরকেও ইসলাম গ্রহণে প্রভাবিত করতে সক্ষম হবেন। মক্কাতে ইসলাম প্রচারের তিনিই হবেন মধ্যমণি। এই দৃষ্টিকোণ থেকে ঈমানের দৃঢ়তায় দৃঢ় এই সব মুসলিমদের মদিনাতে অবস্থান করা অপেক্ষা মক্কাতে অবস্থান করা ইসলাম প্রচারের জন্য সে সময়ে অধিক প্রয়োজন ছিলো। অপরপক্ষে যে মুসলিম স্বইচ্ছায় মদিনা ত্যাগ করে কোরাইশদের সাথে মিলিত হয়, সে মুসলিম সমাজের কলঙ্ক। তাকে ফেরৎ নেয়ার কোনও যৌক্তিকতা নাই।
৬। মুসলমানেরা বিশ্বস্ততার সাথে চুক্তির শর্তসমূহ মেনে চলে। পরবর্তী বছরে ৭ম হিজরীতে মুসলমানেরা তিনদিনের জন্য উমরা পালন করেন।
Last updated on Sep 26, 2017
Minor bug fixes and improvements. Install or update to the newest version to check it out!
Requires Android
4.0.3 and up
Category
Report
সূরা আল-ফাতাহ
1.0 by w3app9
Sep 26, 2017